বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটের রনজিৎপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করায় প্রধান শিক্ষক নিজের স্ত্রীকে দিয়ে তার মেয়ের শ্লীতাহানির মিথ্যা মামলা করিয়েছেন। তবে ইতিমধ্যে পুলিশি তদন্তে বিষয়টি মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। এতে এলাকাবাসির মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাগেরহাট সদর উপজেলার রনজিৎপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ব্যপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। বিদ্যালয়ের ক্রয় কমিটি এমকি আইসিটি শিক্ষককে না জানিয়ে এই নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ক্রয় করায় এলাকাবাসি লিখিত অভিযোগ, মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করে প্রধান শিক্ষকের বিচার দাবী করেন। একই সাথে ওই বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক বনলতা মজুমদার বিভিন্ন টেলিভিশন ও পত্রিকার সাংবাদিকদের কাছে সাক্ষাতকার দেন। যেটি কয়েকটি প্রথম সারির জাতীয় ও আঞ্চলিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।
এতে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক চন্দ্র দাস ক্ষিপ্ত হয়ে নিজের স্ত্রী জয়ন্ত্রী রানী মন্ডলকে বাদি করে তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের শ্লীতাহানির মিথ্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ওই গ্রামের সত্তোরোর্ধ বাগেরহাট জজ কোর্টের আইনজীবী শেখর চন্দ্র দাস, আইসিটি শিক্ষক বনলতা মজুমদারের স্বামী সঞ্জয় কুমার দাস ও স্থানীয় যুগল কৃষ্ণ দাসকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই অভিযোগের বরাত দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করান। কিন্তু বাগেরহাট মডেল থানার তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়।
এ বিষয়ে আইনজীবী শেখর চন্দ্র দাস জানান, বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে অনিয়মের প্রতিবাদ করেছিলাম। এতেই তার স্ত্রীকে দিয়ে আমাদের বিরুদ্ধে তার মেয়ের শ্লীতাহানির মিথ্যা মামলা দায়ের করে। এমন একজন মানুষ কিভাবে একটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হিসেবে থাকতে পারে!এতে এলাকাবাসির মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আইসিটি শিক্ষক বনলতা মজুমদারের স্বামী সঞ্জয় কুমার দাস বলেন, আমি একজন নিরীহ মানুষ। আমার স্ত্রী রনজিৎপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আইসিটি শিক্ষক। বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ক্রয়ে ব্যাপক অনিয়ম হয়েছে। সেই বিষয়টি সে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাতকার দিয়েছে। এজন্য হেড স্যার তার স্ত্রীকে দিয়ে তার স্কুল পড়ুয়া মেয়ের শ্লীতাহানির মিথ্যা মামলা দায়ের করে।
এ বিষয়ে মুঠোফোনে রনজিৎপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপক চন্দ্র দাসের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
উল্লেখ্য, রনজিৎপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের কম্পিউটারসহ বিভিন্ন যন্ত্রপাতি কথিত টেন্ডারের নামে উচ্চ মুল্যে ক্রয় করা হয়েছে। আর রাতের আধার মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষের এসব যন্ত্রপাতি প্রধান শিক্ষক নিজে একটি কক্ষে ঢুকিয়ে রাখেন। তখন নিম্নমানের যন্ত্রপাতি কম দামে ক্রয় করে, বড় অংকের টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।