মো: মোশাররফ হোসেন মনির, মুরাদনগর (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার চাপিতলা ইউনিয়নের ৫৭নং পুস্করিনীরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় দীর্ঘদিন ধরে চলছে শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে। এতে করে খোলা আকাশের নিচে চলছে কোমলমতি শিশুদের পাঠদান। আর এতে করে চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম। প্রতি বছর স্কুলের পড়ালেখার সাফল্যে সুনাম অর্জন করায় প্রতিনিয়ত শিক্ষার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি হলেও বৃদ্ধি হচ্ছেনা স্কুলের কাঠামোগত উন্নয়ন এমন দাবী স্কুলের শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও এলাকাবাসীর। এছাড়াও শিক্ষক সঙ্কটসহ নৈশ্য প্রহরী না থাকায় ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষা কার্যক্রম।
জানা যায়, ১৯৩৩ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হলেও ১৯৭৩ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। পর্যায়ক্রমে স্কুলে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি হলে সরকার ২০৫-২০০৬ অর্থবছরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মাধ্যমে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি ভবন নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে ভবনটির একটি রুমে অফিস কক্ষ অপরটিতে শিশু শ্রেণির ক্লাস চলমান রয়েছে। এই ভবনটিও বর্তমানে জরাজীর্ণ অবস্থা। এমতা অবস্থায় স্কুলটিতে শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে স্থানীয়রা ২০২২ সালে দুই কক্ষ বিশিষ্ট একটি টিনের ঘর নির্মাণ করে দেয়। এরপরও শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট থাকায় খোলা আকাশের নিচে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বাধ্য হচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে চরম দূর্ভোগের শিকার হয়ে চলছে ২৫০ জন শিক্ষার্থীর খোলা আকাশের নিচে পাঠদান। অপরদিকে দীর্ঘদিন থেকে প্রধান শিক্ষক না থাকায় ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক দিয়ে চলছে বিদ্যালয়টি। স্কুলটিতে ৭টি পদের বিপরীতে রয়েছে ৫ জন শিক্ষক। নেই নৈশ প্রহরী।
চতুর্থ শ্রেণির সুমা ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী তারেকসহ অনেক শিক্ষার্থী নতুন বভনের দাবি জানিয়ে বলেন, শ্রেণিকক্ষ না থাকায় বাধ্য হয়ে প্রখর রোদে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করতে হচ্ছে এবং বর্ষাকালে বৃষ্টির কারনে অনেক দিন আমরা ক্লাস করতে পারিনা। আমরা শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট থেকে পরিত্রানের জন্য সংশ্লিষ্টদের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
স্কুল পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ সেলিম সরকার জানান, আমি সভাপতি থাকা অবস্থায় একটি পুরাতন ভবন ছিলো। ভবনটি জরাজীর্ণ থাকায় ২০২২ সালে ওই ভবনটি নিলামের মাধ্যমে ভেঙ্গে ফেলা হয়। এতে করে স্কুলটি চরম শ্রেণিকক্ষ সঙ্কটে বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরী হয়। পরে আমি স্থানীয়দের সহযোগিতায় একটি টিনের ঘর নির্মাণ করি। এতেও শ্রেণিকক্ষ সঙ্কট শেষ না হওয়ায় খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নিতে বাধ্য হই।
পুস্করিনীরপাড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তামান্না আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের বর্তমান পরিস্থিতিতে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। এরপরও কোন প্রকার সহযোগিতা না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
এ ব্যাপারে মুরাদনগর উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রাজ্জাক জানান, নতুন ভবনের ব্যাপারে প্রস্তাব প্রেরণ করা হয়েছে। আশা করি শীঘ্রই নতুন ভবনের বরাদ্দ পাওয়া যাবে। তাতে দ্রুত এই সমস্যা সমাধান হবে। প্রধান শিক্ষক পদোন্নতির মাধ্যমে ও সহকারি শিক্ষকের শূণ্য পদ গুলো খুব শীঘ্রই পূরণ করা হবে।