চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধি: যশোরের চৌগাছায় নিখোঁজের তিনদিন পর চার সন্তানের জননী রাবেয়া বেগমের (৪৮) লাশ উদ্ধার হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে থানা পুলিশ উপজেলার বাঘারদাড়ি গ্রামের নিহতের বাড়ীর সন্নিকটে টিউবওয়েলের পানিফেলা গর্ত থেকে লাশ উদ্ধার করে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নিহতের লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। পূর্ব শত্রুতা ও অবৈধ সম্পর্কে রাজি না হওয়ায় এই হত্যাকান্ড ঘটেছে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার বাঘারদাড়ি গ্রামের রবিউল ইসলামের স্ত্রী, চার সন্তানের জননী রাবেয়া বেগম (৪৮) গত রবিবার সন্ধায় পাশের বাড়ীর জৈনক এক ব্যক্তির বাড়ীতে টেলিভিশন দেখতে যান। টেলিভিশন দেখা শেষ করে তিনি বাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা হন। কিন্তু তিনি আর বাড়ীতে ফিরে আসেননি। নিহতের সন্তানরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। তারপরও তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। এভাবে তিনদিন অতিবাহিত হয়। নিহত রাবেয়া বেগমের হঠাৎ নিখোঁজ হওয়ার ফলে পরিবারে নেমে আসে চরম হতাশা। এই অবস্থায় নিহতের মেয়ে তানজিলা খাতুন মঙ্গলবার সকালে মাকে খোঁজার জন্য আশেপাশে খোঁজ নিতে থাকে। এ সময় তাজুল ইসলামের বাড়ীর পাশে মায়ের ব্যবহৃত একটি জুতা ও ছোট টর্চ লাইট পড়ে থাকতে দেখে। একই সাথে কোনো কিছু টেনে নেয়ার চিহ্ন মাটিতে লক্ষ্য করে। এরই সূত্র ধরে ওই বাড়ীর টিউবওয়েলের পানি ফেলা গর্তে দেখে মায়ের ওড়নার কিছু অংশ ভেসে আছে। এই অবস্থায় তানজিলা খাতুন গর্তে নেমে মায়ের নিথর দেহ খুঁজে পায়।
এ সময় তিনি চিৎকার দিয়ে কাঁদতে থাকেন। তার কান্নকাটির শব্দে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। এ সময় স্থানীয়রা পুলিশে খবর দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ উপস্থিত হয়ে নিহতের লাশ উদ্ধার করে। লাশ উদ্ধারের পর নিহতের শরীরের আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনার পরপরই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান। এ সময় তিনি পুলিশকে গুরুত্বের সাথে তদন্তের নির্দেশ দেন। এ ঘটনায় তাজুল ইসলামের পরিবারের লোকজন ও তামিম পলাতক রয়েছে।
নিহতের ছেলে আলামিন জানান, বিগত পাঁচ মাস আগে পাশের বাড়ীর তাজুল ইসলামের ছেলে তামিমের সাথে আমাদের পারিবারিক ঝগড়া হয়। এ সময় তামিম গাছিদা নিয়ে আমাদের উপর হামলা চালানোর চেষ্টা করে। একই সাথে বিভিন্ন হুমকি দেয়। তামিমদের টিউবওয়লের গর্তে মায়ের লাশ পাওয়া গেছে।
থানার অফিসার ইনচার্জ পায়েল হোসেন জানান, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ময়না তদন্তের জন্য লাশ যশোর মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনার সাথে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অপরাধীদের ছাড় দেয়া হবে না।