কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ভারী বৃষ্টি ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রামে আবারো বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদীর পানি। বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমারের পানি। বিপৎসীমা ছুই ছুই করছে তিস্তার পানিও। এ অবস্থায় চরম বিপাকে পড়েছেন জেলার চরাঞ্চলসহ নিম্নাঞ্চলের বন্যা কবলিত প্রায় ২ লক্ষাধিক মানুষ।
টানা ১১ দিন ধরে পানিবন্দি থাকায় বন্যা কবলিত এলাকায় তীব্র হয়ে উঠেছে বিশুদ্ধ পানি ও খাবার সংকট। জেলা প্রশাসন থেকে ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রাখার কথা বলা হলেও তা না পাওয়ার অভিযোগ দুর্গতদের। অনেকে ঘর-বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নিয়েছেন উঁচু সড়কে। বন্যা কবলিত এলাকায় তীব্র সংকট চলচে গো-খাদ্যের।
সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্রের অববাহিকার ঝুনকার চরের মইনুদ্দিন জানান, প্রায় ১১/১২ দিন ধরে পানিবন্দি জীবন-যাপন করছি। বুধবার পর্যন্ত একটু একটু করে পানি নামতে শুরু করেছিল। কিন্ত গতরাত থেকে আবারও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন্যা দীর্ঘ সময় থাকলে দুর্ভোগ আরো বাড়বে। গত দুই দিন ধরে এসব নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর থেকে ধীর গতিতে নামতে শুরু করলেও গত রাত থেকে তা আবার বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে। পানি আরো বাড়তে পারে বলে জানায় পানি উন্নযন বোর্ড।
স্থানীয় পানি উন্নযন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, গত ২৪ ঘন্টায় চিলমারী পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্রের পানির ১২ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ৪৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে ধরলার পানি সেতু পয়েন্টে ৮ সেন্টিমিটার ও দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৫৮ মিলিমিটার।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, কুড়িগ্রামের ধরলা ও দুধকুমারের অববাহিকায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। আমরা সার্বক্ষনিক জেলার বন্যা পরিস্থিতি নজরে রাখছি। এ পর্যন্ত বন্যা কবলিতদের মাঝে ৫শ ৪২ মেট্রিক টন চাল, ৩২ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ২৩ হাজার ১শ ২০ প্যাকেট শুকনো খাবারের প্যাকেট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এছাড়াও যেখানে যা প্রয়োজন হবে সে ব্যবস্থা নেয়া হবে।