মহাকাশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা ব্ল্যাকহোল আর বামন ছায়াপথের (কম উজ্জ্বলতার ছোট ছায়াপথ, যা ইংরেজিতে ডোয়ার্ফ গ্যালাক্সিস নামে পরিচিত) সংখ্যা সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা ছিল, সর্বশেষ মহাকাশ জরিপে দেখা গেছে, এই দুটি মহাকাশীয় বস্তুর সংখ্যা আমাদের প্রচলিত চেয়েও তিন গুণ বেশি। এখানেই শেষ নয়, এসব ব্ল্যাকহোল (কৃষ্ণবিবর) আর বামন ছায়াপথগুলো কিভাবে একই সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে সে ব্যাপারেও জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আলোকপাত করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের আরিজোনা রাজ্যের কিট পিক ন্যাশনাল মানমন্দিরে (তারাঘর) ডিইএসআই (ডার্ক এনার্জি স্পেসট্রোসপিক ইনস্ট্রুমেন্ট) প্রযুক্তি ব্যবহার করে জ্যোতির্বিজ্ঞানী নতুন এই তথ্য সম্পর্কে নিশ্চিত হয়েছেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আড়াই হাজারেরও বেশি বামন ছায়াপথ পরীক্ষা করে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন।
উল্লেখ্য, এসব বামন ছায়াপথের কেন্দ্রেই অগণিত ব্ল্যাকহোল সক্রিয় রয়েছে। এ সময় মহাকাশের নির্দিষ্ট অংশটিতে তাঁরা প্রায় ৩০০ মাঝারি ভরবিশিষ্ট নতুন ব্ল্যাকহোল শনাক্ত করেছেন। এর আগে তাঁরা মহাকাশের এই অঞ্চলটিতে মাত্র ৭০টি ব্ল্যাকহোল সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের সল্টলেক সিটির উটাহ ইউনিভার্সিটির জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাগদীপিকা পুচা বলেন, বিচ্ছিন্নভাবে ব্ল্যাকহোল নিয়ে গবেষণার চেয়ে একগুচ্ছ ব্ল্যাকহোল নিয়ে গবেষণার সুবিধা অনেক।
কারণ ব্যাপক মাত্রায় গবেষণা পরিচালিত হলে ব্ল্যাকহোল অর বামন ছায়াপথের বিবর্তন সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা পাওয়া সহজ। জ্যোতির্বিজ্ঞানী রাগদীপিকার এই মন্তব্যের ব্যাখ্যা হলো, বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত যা জানেন, সেটা হলো প্রতিটি ছায়াপথের কেন্দ্রে অতিকায় ব্ল্যাকহোল লুকিয়ে রয়েছে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত এটা নিশ্চিত হতে পারেননি যে ব্ল্যাকহোল, নাকি বামন ছায়াপথ আগে সৃষ্টি হয়েছে। জ্যোতির্বিজ্ঞানী স্তেফানি জুনিয়াও বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়েছেন এভাবে : ‘ব্ল্যাকহোল, নাকি বামন ছায়াপথ আগে সৃষ্টি হয়েছে এই প্রশ্নটি মুরগি আগে না ডিম আগের মতোই জটিল।
তবে বিজ্ঞানীরা আশাবাদী যে তাঁরা তাদের এই গবেষণার মাধ্যমে ছায়াপথ আর ব্ল্যাকহোলের বিবর্তন ও সৃষ্টি সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন। সূত্র : সায়েন্সনিউজ.অর্গ