কাশিয়ানী (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গজারিয়াপাড়ায় এক স্কুল ছাত্রকে অপহরণের পর গলা কেটে হত্যার ঘটনায় ওই এলাকার লোকজনের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
এ ঘটনার এক সপ্তাহ অতিবাহিত হলেও ওই এলাকার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেকাংশ কমে গেছে।
এদিকে, হাসিনা সরকারের পতনের পর ‘ছেলেধরা’, ‘গলাকাটা’ বেরিয়েছে গুজব এবং উপজেলার পরানপুর এলাকা থেকে ছেলেধরা সন্দেহে কুদ্দুস শেখ নামে বোরকা পরিহিত এক বাকপ্রতিবন্ধীকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে দেয়ার ঘটনা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ায় উপজেলাজুড়ে অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। ছেলে-মেয়েদের স্কুলে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন অভিভাবকরা।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিকাল ৩ টায় সরেজমিনে উপজেলার ১১১ নং সাফলীডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে- অফিস কক্ষে শিক্ষকরা ছাড়া কোনো শিক্ষার্থী নেই। শ্রেণি কক্ষে তালা ঝুলছে।
তবে শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়টিতে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ১২৪ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে গলাকাটা গুজবে উপস্থিতি কমে গেছে। আজ মাত্র ৪০ জন শিক্ষার্থী বিদ্যালয়ে এসেছিল। অভিভাবকরা সঙ্গে করে নিয়ে এসে হাজিরা দিয়ে আবার সঙ্গে করে নিয়ে গেছেন।
ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসরাত খানম, হোসাইন জানায়, গলা কাটার ভয়ে তারা স্কুলে যায় না। অভিভাবকদের সাথে গেলেও হাজিরা দিয়ে চলে আসে।
শিক্ষার্থীর অভিভাবক মো. হাফিজুর রহমান বলেন, আমার মেয়ে ওই স্কুলে পড়ে। গলাকাটা বেরিয়েছে শুনে ভয়ে স্কুলে পাঠাই না। স্কুলে নিয়ে গেলেও আবার সাথে করে নিয়ে আসি। আমরা অভিভাবকরাও সন্তানদের নিয়ে চরম আতঙ্কে আছি। ঠিকমতো ছেলেমেয়েদের স্কুলে পাঠাতে পারছি না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাহানারা পারভীন বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে এই গ্রামের একটি শিশুকে গলা কেটে হত্যার পর এলাকার ক্ষুদে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। ভয়ে সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন না অভিভাবকরা। অভিভাবকরা দু’একজনকে সঙ্গে করে নিয়ে আসলেও, হাজিরা দিয়ে আবার বাড়িতে নিয়ে যান। ফলে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি অনেক কমে গেছে। আমরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের বোঝানোর চেষ্টা করছি।’
কাশিয়ানী থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, ‘ছেলেধরা’ এটা একটা গুজব। এসব গুজবে কান না দেওয়ার জন্য অনুরোধ করা হল। তবে সন্তান ও অভিভাবকদের সচেতন থাকতে হবে।’