আটঘরিয়া (পাবনা) প্রতিনিধি: কোনো চাষ ছাড়াই, কাদার মধ্যে মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদন করে লাভবান হচ্ছে কৃষক। বিনা চাষে কাদার উপর রসুন আবাদ কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এখন কৃষকরা বিনা চাষে রসুন উৎপাদনে বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে। কৃষি অফিসও তাদেরকে দিচ্ছেন বিনা চাষে রসুন উৎপাদনে নানান রকম পরামর্শ।
আটঘরিয়া উপজেলার ছাতিয়ানি গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম দেড় থেকে দুই বিঘা জমিতে বিনা চাষে কাদার উপর রসুন আবাদ শুরু করেন। তার এ অভিনব চাষাবাদ দেখে এলাকার অনেক কৃষক তার পরামর্শক্রমে বিনা চাষে রসুন উৎপাদনে ঝুঁকে পড়ছে। তবে উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে বিনা চাষে রসুন উৎপাদন দেখে তার মধ্যে আগ্রহ জাগে। তিনি বর্ষা মৌসুম শেষ হওয়ার পরই জমিতে পানি সরে যাওয়ার পর কাদার মধ্যে দেড় বিঘা জমিতে বিনা চাষে রসুন বপন করেন। ওই রসুন ক্ষেতে খড় বিছিয়ে দেন। ২টি সেচ দেয়ার ফলে ওই খড় পচে মাটিতে মিশে যায়। এতে সার কম লাগে। তার এ পদ্ধতি চাষ করা দেখে অনেক কৃষক নানা কথা বললেও ওই জমিতে উৎপাদন করে।
কৃষকরা জানান, এ পদ্ধতিতে রসুনের চাষ করলে জমিতে চাষ দেয়া ও কোপানো লাগে না। সার ও ওষুধ কম লাগে। শুধু মাত্র ২টি সেচ দিলেই হয়। লাগানো রসুন ক্ষেতের চেয়ে অনেক বড় বড় গাছ ও রসুন বড় হয়। ফলে ১০-১২টি রসুনেই এক কেজি হয়। তার এ পদ্ধতি দেখে অন্যান্যে কৃষকরা তার সহযোগিতা চাইলে তিনি তাদের রসুন সরবরাহ করাসহ নানা ধরনের পরামর্শ দেন। তার এ পরামর্শ নিয়ে এ বছর দুলাল মৃর্ধা, আজগর আলী, তোফায়েল আহমেদ, হান্নান আলী সহ অনেকেই বিনা চাষে রসুনের আবাদ করেছেন। এখন অনেক কৃষকই এ পদ্ধতি চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
কৃষকেরা আরো জানান, এ পদ্ধতির চাষাবাদে চাষের পদ্ধতির চেয়ে দ্বিগুণ রসুন উৎপাদন হবে। চাষ করে রসুন আবাদ করলে প্রতি বিঘায় ২০ মণ রসুন ফলন হয়, আর বিনা চাষে ৩৫ থেকে ৪০ মণ রসুন ফলন হয়।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল হক জানান, আবহাওয়ার কারণে বর্ষার পানি সরতে ও চাষ করতে রসুন আবাদে এক-দেড়মাস পিছিয়ে যেতে হয়। এ কারণে সামান্য কাদার উপর রসুন লাগালে সময় এগিয়ে আসে। এতে উৎপাদন খরচ কম হয় ও ফলন বাম্পার হয়। ফলে কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। এ পদ্ধতির চাষাবাদে কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণ করা হচ্ছে।
আটঘরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার সজীব আল মারুফ বলেন, চলতি বছর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কৃষকরা বিনা চাষে রসুনের আবাদ শুরু করেছে, প্রতি হেক্টর জমিতে ৭ থেকে ৮ মেট্টিক টন রসুন ফলন হবে। আগামীতে রসুন আবাদ ব্যাপকভাবে বেড়ে যাবে।