ঢাবি প্রতিনিধি: শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর 'স্বৈরাচার পরবর্তী বাংলাদেশ র্যালি ও বিশেষ আয়োজন' করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। আয়োজনে সারাদেশে সম্প্রীতি ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেল সাড়ে ৪টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিশ্বধর্ম ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে এ আয়োজন করা হয়।
আন্দোলনে শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতাকে স্মরণ করে র্যালিটি অপরাজেয় বাংলা থেকে শুরু হয়ে টিএসসিতে শেষ হয়। এসময় কয়েকজন শিক্ষার্থী বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের পোশাক পড়ে আসেন এবং সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান। শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি শিক্ষকরাও র্যালিতে অংশগ্রহণ করেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা নতুন এক সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমরা ২য় বারের মতো স্বাধীন হয়েছি। আমাদের প্রথম কাজ হচ্ছে সম্প্রীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। বিচারের ক্ষেত্রে কোনো বিশেষ গোষ্ঠী বিশেষ সুবিধা পাবে না। প্রত্যেক সেক্টরে স্বৈরাচার যে সিস্টেম তৈরি করেছে তা ভেঙে পুনর্গঠন করতে হবে।
তাহমিদ আল মুদ্দাসির বলেন, বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলাগুলো পরিকল্পিতভাবে করা হচ্ছে। স্বৈরাচার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নস্যাৎ করতে সাম্প্রদায়িক বলেছিলো। স্বৈরাচার পালিয়ে গেলেও তাদের দোসররা কিন্তু পালিয়ে যায়নি। সাম্প্রদায়িক হামলার মাধ্যমে ডিভাইড এন্ড রুল পিলিসি বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে। অনেক হিন্দু আওয়ামীলীগ নেতার বাড়িতে হামলা হয়েছে কিন্তু এটাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেয়া হচ্ছে। আমরা শিক্ষার্থীরা এসকল ন্যাক্কারজনক হামলা চাই না। কেউ অপরাধী হলে আইনি প্রক্রিয়ায় তার বিচার হবে। আমরা বৈষম্যমুক্ত একটা বাংলাদেশ চাই। এসময় তিনি শিক্ষকদের ও জনগণকে সাম্প্রদায়িক হামলা প্রতিরোধে জনমত তৈরির আহ্বান জানান।
শিক্ষার্থী সোহাগ বলেন, সংখ্যালঘু বলে কোনো শব্দ থাকবে না। আমরা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক। হিন্দু-মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান সবাই মিলে বসবাস করবে। সবার সমান অধিকার থাকবে, বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করা হবে। আমরা শিক্ষার্থীরা উপাসনালয়গুলোতে পাহারা দিচ্ছি, ট্রাফিক মেইনটেইন করার চেষ্টা করছি, দেশে সম্প্রীতিও গড়বো।
আরেক শিক্ষার্থী কামরুন নাহার মুন্না বলেন, অনেকে এখন বিজয়ের জন্য ক্রেডিট নিচ্ছে। আমাদের অনেকেরই বিভিন্ন দলের প্রতি সফট কর্ণার আছে। অনেকেই এখন সভা সমাবেশ করবে, বাইকে করে শোডাউন দিবে কিন্তু আমরা জনগণ এখন আর বোকা না। কিন্তু আমাদের উচিত হবে সবার উর্ধ্বে ছাত্র-জনতার ক্রেডিট দিবে। এই বিজয় পুরো জাতির আমরা বাকস্বাধীনতা পেয়েছি এটাকে আমাদের ধরে রাখতে হবে।
অধ্যাপক ড. আবু সায়েম বলেন, আমরা ২য় বার মুক্তিযুদ্ধ করেছি। সকল অপচেষ্টা সমন্বিতভাবে রুখে দিতে হবে তাহলেই আমাদের বিপ্লব সফল হবে। আমরা একদলের পতন ঘটিয়ে নতুন কোনো স্বৈরাচার আসুক আমরা চাই না। আমাদেরকে বৈষম্যমুক্ত একটি দেশ তৈরি করতে হবে। নতুন এক সম্প্রীতির বাংলাদেশ চাই। এসময় তিনি কোটা পদ্ধতির পুনর্বিবেচনা, আইনের শাসন ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।