ঢাবি প্রতিনিধি: আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক ড. মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ‘ছাত্র-জনতার বিপ্লবে বিদেশি শক্তির কোনো কৃতিত্ব নেই। আমাদের ছাত্রজনতা এই বিজয় ছিনিয়ে এনেছে, এর কৃতিত্ব তাদের।’
শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে ‘বিপ্লবোত্তর বিভাজনের ষড়যন্ত্র: জাতীয় ঐক্যে করণীয়’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। গভর্নেন্স অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ এ আলোচনা সভাটির আয়োজন করে।
মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘ঐক্যের জন্য আমাদের জিওপলিটিক্যাল স্ট্রাটিজি থাকতে হবে। আমরা আবার ৫ই আগষ্টের ঐক্য দেখতে চাই৷ আমার দেশ পত্রিকা বের হলে এই বিপ্লবের প্রতিটি শহিদের পরিচয় তুলে ধরা হবে৷’
কর্নেল জাকারিয়ার সঞ্চালনায় সভাটিতে সভাপতিত্ব করেন কর্নেল আব্দুল হক।
সভায় বিপ্লবোত্তর জাতীয় ঐক্য গঠনের করণীয় বিষয়ে লে. ক. জোবায়ের বলেন, বিগত পনেরো বছর আমাদের ব্রেন ওয়াশ করা হয়েছে৷ দূর্নীতির কষাঘাতে আমরা এখনো তৃতীয় বিশ্বের দেশে পরিনত হয়েছি৷ সকল সমস্যা কাটিয়ে উঠতে আমাদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
ফ্লাইট লে. হারুনুর রশিদ বলেন, একজন মানুষ তখনই দেশপ্রেমিক নাগরিক হয়ে উঠবে যখন সে বুঝতে শিখবে ভারত আমাদের শত্রু। আমাদের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
ব্রিগেডিয়ার আব্দুল্লাহ আল ইউসূফ বলেন, আমাদের নেতারা জনগনের শক্তিকে বিশ্বাস করে না। কিছু হলেই তারা কেউ আমেরিকার দিকে তাকিয়ে থাকে। আবার কেউ চীনের দিকে তাকিয়ে থাকে। কিন্তু জনগনের শক্তিই আজকে দেশকে নতুন স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। এটাই আমাদের চালিকা শক্তি৷
মহিউদ্দিন আহমেদ ভূইয়া নাইম বলেন, রাজপথের ঐক্যকে রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ছড়িয়ে দিতে হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইয়ে নতুন বিপ্লবের গল্প ছাপিয়ে দিতে হবে।
কর্নেল আইয়ুব বলেন, ক্যান্টনমেন্ট থাকলে দেশ থাকবে, জনগণ থাকবে প্রতিষ্ঠান থাকবে।
লে. কর্নেল মোশাররফ বলেন, আমাদের জুজুর ভয় থেকে বের হয়ে ঐক্যের জন্য যে কাঠামো দরকার তা গঠন করতে হবে।
কর্নেল হাসিনুর রহমান বীর প্রতিক বলেন, আমাদের চেতনায় থাকতে হবে ফেলানীর ঝুলন্ত লাশ। ভারত বিরোধিতার নীতিতে আমাদের ঐক্য হবে৷
ব্যারিস্টার সারোয়ার বলেন, আমাদের দরকার ছিল বিপ্লবী অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। এই বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট ছাড়া সবার অবদান রয়েছে৷ জুলাইয়ের চেতনা হোক আমাদের ঐক্যের ভিত্তি৷
এডমিরাল মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিপ্লব হয়েছে এখন এই অকার্যকর সংবিধান বাদ দিয়ে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করতে হবে৷
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হাসান নাসির বলেন, এই বিপ্লবের মেরুদণ্ড ছিল ছাত্র জনতা ও সেনাবাহিনী। পতিত সরকারের প্রত্যেককে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে৷
সভাপতির বক্তব্যে কর্নেল আব্দুল হক বলেন, অপারেশনের আগে অবশ করতে হয়, ভারত শেখা হাসিনাকে দিয়ে দেশের প্রায় প্রতিটি প্রতিষ্ঠান অবশ করেছে কিন্তু সেনাবাহিনী আর ছাত্র সমাজকে তারা অবশ করতে পারেনি। এটিই স্বৈরাচারের পতনের অন্যতম কারণ। আমাদের এমন ইসপাত কঠিন ঐক্য দরকার।
সভার আরও বক্তব্য রাখেন অ্যাড. মো: মুহসিন রশিদ, ডা. মিজানুর রহমান, বি.জে. নাসিমুল গনি, এয়ার কমডোর শফিকুল ইসলাম, হেফাজতের মাও: আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কর্নেল আকরাম, এডমিরাল মোস্তাফিজুর রহমান, মেজর ইমরান, মেজর সিদ্দিকী, আহমেদ সামরান, ক্যাপ্টেন শোয়েব খান, শাহ মো: মাহবুবুল হক, মেজর মাহবুব, আরিফুল ইসলাম, মেজর রিয়াজুল ইসলাম শাহিন, মোশাজ্জেম হোসেন খান মজলিস, ড. মনজুর মাহমুদ, একেএম ফজলুল হক, মিনহাজুল আবেদীন, আহমেদ সৈকত, সাইফুল মির্জা সহ অন্যান্যরা।