ঢাকা
১৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
রাত ১০:২৩
logo
প্রকাশিত : জুলাই ১১, ২০২৪
আপডেট: জুলাই ১১, ২০২৪
প্রকাশিত : জুলাই ১১, ২০২৪

আগামী বছর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি চালুর প্রত্যাশা ইউজিসির

আগামী বছর থেকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পিএইচডি চালুর প্রত্যাশা জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ। তিনি বলেন, ‘নীতিমালা তৈরির কাজ অনেক দূর এগিয়েছে। খসড়া চূড়ান্ত করে তা অনুমোদনের জন্য দ্রুতই পূর্ণ কমিশনে পাঠানো হবে। আশা করছি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আগামী বছর থেকেই পিএইচডি চালু করতে পারব।

রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ইস্ট ওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ লিমিটেড মিলনায়তনে গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় ইউজিসি সদস্য ড. বিশ্বজিৎ চন্দ পিএইচডির বিষয়ে উল্লিখিত প্রত্যাশার কথা বলেন। জাতীয় আয়োজনে ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির সম্ভাবনা, চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

আরো বক্তব্য দেন ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যাগ্রিকালচার অ্যান্ড টেকনোলজির উপাচার্য ড. আব্দুর রব, ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য ড. আবুল কাশেম মিয়া, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য ড. সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ, ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশের উপ-উপাচার্য নিয়াজ আহমদ খান, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন এস কে তৌফিক এম হক এবং ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ডিন ড. কবিরুল ইসলাম।

এখানে সুধীজন ও সমাজের নীতিনির্ধারকরা উপস্থিত থেকে আলোচনা করেন। আমাদের পত্রিকার মাধ্যমে আমরা এই আলোচনাগুলো সরকারের উচ্চ মহল থেকে শুরু করে সমাজের প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার চেষ্টা করি।

ইউজিসি সদস্য অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘গুণগত মান নিয়ন্ত্রণের জন্য সব বিশ্ববিদ্যালয় বা বিভাগ পিএইচডি দেওয়ার অনুমোদন পাবে না। এই ডিগ্রি চালুর অনুমোদন পেতে হলে ইউজিসির চেকলিস্টে থাকা সব শর্ত পূরণ করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বা বিভাগগুলোতে এই ডিগ্রি প্রদানের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা থাকতে হবে। যেমন পর্যাপ্ত ল্যাব, গবেষণা ও দক্ষ শিক্ষক থাকতে হবে। নিয়ম না মানলে অনুমোদন প্রত্যাহার করা হবে।

অধ্যাপক ড. বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, ‘আলংকারিক (নামসর্বস্ব) পিএইচডি ডিগ্রি গ্রহণকে আমরা নিরুৎসাহ করব। ডিগ্রি নিয়ে নামের আগে শুধু ‘ড.’ বসাবেন তা হবে না। কেন পিএইচডি নেবেন, তা রাষ্ট্র, সমাজ ও আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে কী ভূমিকা রাখবে তা বিবেচনা করা হবে।’

ইউজিসি সদস্য জানান, পিএইচডি প্রগ্রামে ভর্তি হওয়ার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে প্রার্থীর আগের অভিজ্ঞতা এবং আকাঙ্ক্ষা জেনে নেওয়া হবে। এই ডিগ্রি পরবর্তী সময়ে তিনি কিভাবে কাজে লাগাবেন তা-ও দেখা হবে। পিএইচডির দোকান যেন খোলা না হয় সে লক্ষ্য নিয়ে নীতিমালা তৈরি করা হবে।

অধ্যাপক ড. আব্দুর রব বলেন, ‘ইউজিসি নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির অনুমোদন দেওয়া হবে। এখন আমাদের মানের দিকটি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করতে হবে। ইউজিসি যে নীতিমালা তৈরি করছে, তা মানতে হবে। মাস্টার্স করে পিএইচডিতে ভর্তি হলে কোর্স সংখ্যা বেশি হওয়ার প্রয়োজন হবে না। অন্যথায় কোর্সের প্রয়োজন বাড়তে পারে। শিক্ষকদের বিশেষ করে সুপারভাইজার নির্বাচনে বিশেষ যোগ্যতা থাকতে হবে।’

অধ্যাপক ড. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, ‘বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডির সম্ভাবনা অনেক। সাম্প্রতিক সময়ের বিভিন্ন র্যাংকিংয়ে দেখা যায়, প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব কাছাকাছি রয়েছে। সুতরাং প্রতিটি জায়গায় আমরা প্রতিযোগিতা করছি। কাজেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি এখন সময়োপযোগী কথা এবং এর সম্ভাবনা প্রচুর।’

অধ্যাপক ড. সৈয়দ মাহফুজুল আজিজ বলেন, ‘পিএইচডি যে সর্বজনীন শিক্ষার বিষয় নয়, এটা আমাদের সবাইকে বুঝতে হবে। প্রতিটি জিনিসের একটি উদ্দেশ্য থাকে। আমি একটি জিনিস করলাম, তার সুফল, ফসলটা ঘরে তুলতে পারলাম না, দেশ, জাতি প্রতিষ্ঠান লাভবান হলো না। শুধু নামের আগে ড. বসল, এ ধরনের পিএইচডি যেন আমরা উৎসাহিত না করি। কোনো ব্যক্তির পিএইচডি করার কারণটা আগে জানা দরকার। সেই সঙ্গে পেশাজীবনে এর ব্যবহার হবে কি না সেটাও দেখা দরকার।’

অধ্যাপক নিয়াজ আহমদ খান বলেন, ‘আমাদের সামাজিক এবং রাজনৈতিক বাস্তবতায় কিছু না কিছু প্রভাব কিংবা হস্তক্ষেপের ভয় থেকেই যায়। সেই প্রভাব বা হস্তক্ষেপের ব্যাপারটা অত্যন্ত বস্তুনিষ্ঠভাবে কিছু মাপকাঠির ভিত্তিতে মোকাবেলা করতে হবে। এ বিষয়টি নীতিমালায় যত পরিষ্কারভাবে আনতে পারব ততই আমাদের জন্য কাজটি সহজ হবে।’

অধ্যাপক এস কে তৌফিক এম হক বলেন, ‘পুরো বিশ্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের জগতে বলা হয়, গবেষণা ছাড়া পিএইচডি কখনোই সম্ভব নয়। পিএইচডি প্রগ্রাম না থাকলে গবেষণার বিকাশ হয় না। আবার পিএইচডি শিক্ষার্থী না থাকলে র্যাংকিংয়েও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পিছিয়ে পড়তে হয়। আশা করি এই ডিগ্রি চালুর মাধ্যমে বিদেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেশের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নেটওয়ার্কিং বৃদ্ধি পাবে।’

অধ্যাপক ড. কবিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে যদি আন্তর্জাতিক কাঠামোতে পিএইচডির কাঠামো তৈরি করতে পারি, তবে গুণগত মান নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। এভাবে প্রতি বর্ষের সেমিস্টারে যদি একটা সেমিনার থাকে এবং সেই সেমিনারে পিএইচডি প্রার্থীর মূল্যায়ন করা হয়, তবে সেটি খুব তাৎপর্যপূর্ণ পিএইচডি হবে।’

সর্বশেষ
logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram