বিদ্যুৎ-পানি বন্ধ করলেও হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার হল ছাড়তে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোটা সংস্কারের বিক্ষোভ মিছিল থেকে এ কথা জানান। এর পর তার পর্যন্ত কোনো শিক্ষার্থী হল ত্যাগ করেনি বলে জানিয়েছে ববি শিক্ষার্থীরা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের ববি সমন্বয় কমিটির সদস্য সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ হবে না। হল খালি করতে পারবে না। বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ কেটে দিলেও আমরা হল থেকে নামব না। আন্দোলনকারী ও আবাসিক শিক্ষার্থী ভূমিকা সরকার বলেন, কোনো শিক্ষার্থী হল ছাড়বে না। যতই নির্দেশনা আসুক শিক্ষার্থীরা মানবে না।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শেরেবাংলা ও বঙ্গবন্ধু হলের একাধিক আবাসিক শিক্ষার্থী জানান, আন্দোলনকে বানচাল করতে সরকার এখন বিশ্ববিদ্যালয় ও হল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। অধিকার আদায় না হওয়া পর্যন্ত কেউ হল ছাড়বে না।
শেখ হাসিনা হলের এক আবাসিক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের এক আবাসিক শিক্ষক বলে গেছেন, ব্যাগপত্র গুছিয়ে নেওয়ার জন্য। কিন্তু আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এই আন্দোলনের মধ্য কোথাও যাব না, হলে আছি, হলেই অবস্থান করব।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মনিরুল ইসলাম বলেন, হল ছাড়ার সিদ্ধান্ত আমরা দেইনি। এটা সরকার দিয়েছে। আমরা আশাবাদী, সরকারের এ সিদ্ধান্ত শিক্ষার্থীরা মেনে নেবেন।
তিনি আরও বলেন, ইউজিসি থেকে সব বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তীতে নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম ও আবাসিক হলসমূহ বন্ধ ঘোষণা করা হল। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার স্বার্থে বুধবার বেলা ৩টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের আবাসিক হল ত্যাগ করে করে নিরাপদ আবাসস্থলে অবস্থানের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থীদের হল না ছাড়ার বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আব্দুল কাইউম বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের মোটিভেশন করছি। আশা করছি, ভালো কিছু একটা হবে।
এদিকে, হামলার গুজবকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রাতে নির্ঘুম কাটিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা। উপাচার্য, প্রক্টর, প্রভোস্টসহ শিক্ষক-কর্মকর্তারা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে হলে সময় কাটিয়েছেন। হামলার গুজবকে কেন্দ্র করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে মঙ্গলবার রাত ১১টার পর থেকে প্রভোস্টরা প্রতিটি হলের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাদা আলাদা বৈঠক করেন। পরবর্তীতে মাঝ রাতে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভুঁইয়া প্রক্টরিয়াল বডি ও শিক্ষক নেতাদের সঙ্গে নিয়ে হলগুলো পরিদর্শন করেন। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন উপাচার্য।
শিক্ষার্থীরা জানান, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার গুজবে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।