ঢাবি প্রতিনিধি: শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ সমাবেশ ও প্রতিবাদ মিছিলের মুখে পদত্যাগ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ।
বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) উপাচার্য বরাবর এ পদত্যাগপত্র জমা দেন তিনি। উপাচার্য অফিস এটি গ্রহণ করে।
এর আগে একই দিন সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুষদের কাজী মোতাহার হোসেন ভবনের সামনে অবস্থান নিতে শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। পরে দুপুর সোয়া ১২টায় একটি বিক্ষোভ সমাবেশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা শহীদ মিনার-জগন্নাথ হল পার হয়ে ফুলার রোড দিয়ে ঈশা খান রোডে অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বাসভবনের সামনে অবস্থান নেন।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘দালালের ঠিকানা—এই ক্যাম্পাসে হবে না’, ‘দফা এক দাবি এক—দালালের পদত্যাগ’, ‘রহমত উল্লাহর ঠিকানা—এই ক্যাম্পাসে হবে না’, 'রহমত উল্লাহর গদিতে-আগুন জ্বালো একসাথে', 'হাসিনা গেছে যে পথে-তুইও যাবি সেই পথে', 'স্ক্রিনশট দিবি কার কাছে-ভিসি তো পালায় গেছে', 'ভিসি গেছে যে পথে-রহমত যাবে সেই পথে'— ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন।
অধ্যাপক রহমত উল্লাহর বাসভবনের সামনে প্রায় ১ ঘণ্টা অবস্থানকালে শিক্ষার্থীরা স্লোগান দেওয়ার পাশাপাশি মুক্তির মন্দির সোপান তলে, ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা আমাদের এই বসুন্ধরা, কারার ঐ লৌহ কপাট, তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর পারি দেব রে ইত্যাদি গান গাইতে থাকেন।
জানা গেছে, এর কয়েকদিন আগে শিক্ষার্থীরা বর্তমান চেয়ারম্যান এবং ডিন অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহ- এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির প্রতি অস্বীকৃতি জানান এবং পদত্যাগ করতে অপারগতা প্রকাশ করেন। এতে শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ হয়ে চেয়ারম্যান ও ডিন অফিসসহ বিভাগের সকল প্রকারের কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করে এবং অফিসসমূহে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীরা জানান, চেয়ারম্যান ও ডিন পদত্যাগ না করা পর্যন্ত তারা কোনো শিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করবে না।
শিক্ষার্থীরা বলেন, আইন অনুষদের ডিন স্বৈরাচার শেখ হাসিনার অন্যতম সহযোগী। শেখ হাসিনার মতোই তিনিও ক্ষমতার অপব্যবহার করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্বৈরাচারী আচরণ করেন। আমরা গণহত্যার দোসর এমন দালাল শিক্ষক চাই না। অবিলম্বে তাকে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ না করলে আমাদের আন্দোলন চলতে থাকবে।
উল্লেখ্য, গত ১৭ আগস্ট সরকারের হঠকারী সিদ্ধান্তসমূহে পৃষ্ঠপোষাকতা করা, বর্তমান ছাত্র আন্দোলনে প্রশ্নবিদ্ধ অবস্থান এবং অনুষদ প্রধান হিসেবে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি তার দায়িত্বহীন ভূমিকার কারণে আইন বিভাগের বর্তমান ডিন এবং চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. রহমত উল্লাহর পদত্যাগের দাবিতে আল্টিমেটাম দিয়েছিল শিক্ষার্থীরা।