ইবি প্রতিনিধি: সম্প্রতি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকে বারংবার বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ফলে ছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে টিচার্স কোয়ার্টারে ‘কপোতাক্ষ’ থাকার ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। সোমবার (০৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ছাত্রীরা এই ভবনে উঠেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হলটির আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক।
জানা যায়, খালেদা জিয়া হলের পুরোনো ব্লকে প্রায়ই ছোট-বড় বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনা ও শর্ট সার্কিট থেকে আগুন লাগার মতো ঘটনা ঘটে। সর্বশেষ জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বড় দুর্ঘটনা ঘটে। সেসময় হলের তিনতলা পর্যন্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ মেরামত করার কথা থাকলেও দুই তলা পর্যন্ত করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় মেরামতের নামে শুধু জোড়াতালি দেয়া হয়। থাকার বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকি নিয়ে হলে অবস্থান করতে হচ্ছিল ছাত্রীদের।
এদিকে সর্বশেষ গত ২ ও ৪ সেপ্টেম্বর বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিটের ঘটনা ঘটে। এসময় আতঙ্কিত হয়ে কয়েকজন ছাত্রী সেন্সলেস হওয়ার খবর পাওয়ার যায়। এরপর হলজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে হলে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ বলে ছাত্রীদের অন্য স্থানে থাকতে বলে কর্তৃপক্ষ। তবে থাকার ব্যবস্থা না হওয়ায় বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে ঝুঁকি নিয়েই হলে অবস্থান করে ছাত্রীরা।
পরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করাসহ হলের ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফীর সাথে আলোচনায় বসেন। সেখানে ছাত্রীদের পক্ষ থেকে হলের সমস্যা নিরসনে চার দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। এরই প্রেক্ষিতে সোমবার পুরাতন ব্লকের ২০১৮-১৯ এবং ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রীদের প্রথম ধাপে টিচার্স কোয়ার্টারে স্থানান্তর করেছে প্রশাসন।
এ বিষয়ে হলের আবাসিক শিক্ষক ড. এরশাদুল হক বলেন, আমরা এখানে প্রায় শতাধিক ছাত্রীর আবাসন ব্যবস্থা করেছি। তাদের নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক আনসার ও আয়া নিয়োজিত থাকবে। তাদের খাবারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, হলের ডাইনিং থেকে তাদের জন্য প্রতি বেলায় খাবার এখানে নিয়ে আসা হবে। আশাকরি তাদের কোনো ধরনের সমস্যা হবে না। এর পরেও যদি তারা নিরাপত্তা সংকট মনে করে, তাহলে সমন্বয়ক প্যানেল এবং আমরা মিলে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী এ. কে. এম. শরীফ উদ্দীন বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের অবস্থানের স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। কোয়ার্টারে মোটামুটি সব রুমের বিদ্যুৎ সেবা নিশ্চিত করা হয়েছে। সব মিলিয়ে হয়তোবা পঁচিশ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে এখানে। আর হলের পুরাতন ব্লক সংস্কারের জন্য প্রাথমিক একটা হিসাব ৪৮ লক্ষের মতো লাগবে বলে জেনেছি। বাজেট পাওয়ার পর দ্রুতই কাজ শুরু করা হবে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি প্রশাসনিক ও আর্থিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী বলেন, হলের বিদ্যুৎ সমস্যার কারনে ছাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছিলো। আমরা তাদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে দ্রুত সময়ে কপোতাক্ষ ভবন সংস্কার করে এখানে নিয়ে এসেছি। এখানে সার্বক্ষণিক আনসার, নিরাপত্তা কর্মী এবং আয়া অবস্থান করবেন। আমরা হলের সমস্যা দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করতেছি। আশা করছি খুব দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে যাবে।