ঢাকা
১৮ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
বিকাল ৫:২১
logo
প্রকাশিত : অক্টোবর ২, ২০২৪

এখনো ভিসিবিহীন ৯ বিশ্ববিদ্যালয়, ব্যাহত শিক্ষাকার্যক্রম

আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে একে একে পদত্যাগ করেছেন ৪২ জন উপাচার্য (ভিসি)। কিন্তু এখনো ৯টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি নিয়োগ করা হয়নি। ফলে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম পরিচালনা ব্যাহত হচ্ছে। একই সঙ্গে ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা।

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সূত্র জানায়, দেশে শিক্ষা কার্যক্রম চালু থাকা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ৫৫। এর মধ্যে গত ৫ আগস্টের পর থেকে একে একে ৪২ জন ভিসি পদত্যাগ করেছেন। তবে ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এখনো পদত্যাগ করেননি।

তিনটি বিশ্ববিদ্যালয় বিশেষভাবে পরিচালিত হয়। তবে উপাচার্যের পদ শূন্য থাকা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সরকার এখন পর্যন্ত ৩৩ জন উপাচার্য নিয়োগ দিয়েছে। ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়নি।

সূত্র জানায়, উপাচার্য নিয়োগে বেশ কিছু মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে বর্তমান সরকার।

এর মধ্যে গত সরকারের আমলে সুবিধাভোগী ও সমর্থনকারী কাউকে উপাচার্য পদে দেওয়া হবে না। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে একাডেমিক স্কলার হতে হবে, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা থাকতে হবে এবং শিক্ষার্থীদের কাছে গ্রহণযোগ্য হতে হবে। কিন্তু সব মানদণ্ড পূরণ করা শিক্ষক পেতে বেশ বেগ পেতে হচ্ছে।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিশ্ববিদ্যালয়-১ অধিশাখা) নুরুন আক্তার বলেন, ‘বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ভিসি নয়, প্রোভিসি ও ট্রেজারার পদও শূন্য হয়ে যায়। আমরা কিন্তু বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্যপদ পূরণ করতে পেরেছি।

তবে এখনো কিছু বাকি আছে। সেগুলোর কাজ চলছে। এখন একটি ফাইল প্রসেস করে তা বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে আসতে সময় লাগে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়েরই ফাইল চলমান। আশা করছি, নিয়োগপ্রক্রিয়া দ্রুত শেষ হয়ে যাবে।’

জানা যায়, গত জুন থেকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ রেখে সর্বজনীন পেনশনে অন্তর্ভুক্তি বাতিলের দাবিতে আন্দোলনে নামেন। এরপর ১ জুলাই থেকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সর্বাত্মক কর্মবিরতিতে যান। তখন থেকে পুরোপুরি বন্ধ থাকে ক্লাস-পরীক্ষা। কোটা সংস্কার ঘিরে আন্দোলন শুরু হলে গত ১৭ জুলাই থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। এরপর ১৮ আগস্ট থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভিসি, প্রোভিসি ও ট্রেজারার না থাকায় পুরোপুরি ক্লাসে ফিরতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো। ফলে প্রায় তিন-চার মাস বন্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সেশনজট দীর্ঘ হওয়ার আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বলছেন, অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য নিয়োগ দেওয়া হলেও তাঁরা এখনো গুছিয়ে উঠতে পারছেন না। কারণ দেখা যাচ্ছে, শুরুতে তাঁদের প্রশাসনিক পদগুলো পূরণ করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে। কারণ তাঁরা সব শিক্ষককে খুশি করতে পারছেন না। এতে কেউ কেউ তাঁদের বিপক্ষে চলে যাচ্ছেন। আবার ক্যাম্পাসে যাতে কোনো কাজে কোনো ধরনের বিতর্কের মধ্যে না পড়তে হয়, সেদিকটা বিশেষভাবে খেয়াল রাখতে হচ্ছে।

ভিসিবিহীন ৯ বিশ্ববিদ্যালয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সায়েন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনো ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিনদের সভা থেকে সিনিয়র একজন শিক্ষককে আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্ব দিয়ে কোনোমতে কাজ চালানো হচ্ছে।

পদত্যাগ না করা ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য

সরকার পতনের পর ৪২ জন উপাচার্য পদত্যাগ করলেও ১০ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এখনো পদত্যাগ করেননি। তাঁরা হলেন : বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় সিলেটের উপাচার্য ডা. এ এইচ এম এনায়েত হোসেন, চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. নাছিম আখতার, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় কিশোরগঞ্জের উপাচার্য জেড এম পারভেজ সাজ্জাদ, হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আবদুল বাসেত, শেখ হাসিনা মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় খুলনার উপাচার্য ডা. মোহাম্মাদ মাহবুবুর রহমান, কুড়িগ্রাম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এ কে এম জাকির হোসেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আবু নঈম শেখ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পিরোজপুরের উপাচার্য কাজী সাইফুদ্দীন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশ্ববিদ্যালয় নওগাঁর উপাচার্য মো. আবুল কালাম আজাদ এবং মুজিবনগর বিশ্ববিদ্যালয় মেহেরপুরের উপাচার্য মো. রবিউল আলম।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পদত্যাগ না করা উপাচার্যরা সাধারণত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর। সেখানে দু-চার বছর ধরে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ফলে সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী সাধারণত দু-চার শর বেশি হবে না। বেশির ভাগ উপাচার্য শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু এসব নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী খুব কম হওয়ায় সেখানে শিক্ষার্থীদের চাপ নেই। ফলে উপাচার্যরা এখনো বহাল রয়েছেন।

কার্যক্রম শুরু হয়নি ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের

দেশের ৫৫টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে আরো ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের আইন পাস হয়েছে। কিন্তু সেগুলোতে এখনো ভিসি নিয়োগ দেওয়া হয়নি। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো কার্যক্রমও শুরু হয়নি। সেগুলো হচ্ছে : বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শরীয়তপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়, লক্ষ্মীপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সাতক্ষীরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় নারায়ণগঞ্জ।

logo
প্রকাশকঃ অধ্যাপক ড. জোবায়ের আলম
ভারপ্রাপ্ত সম্পাদকঃ তাপস রায় সরকার
মোবাইল: +৮৮০ ১৭৩৬ ৭৮৬৯১৫
কার্যালয় : বিটিটিসি বিল্ডিং (লেভেল:০৩), ২৭০/বি, তেজগাঁও (আই/এ), ঢাকা-১২০৮
মোবাইল: +880 2-8878026, +880 1736 786915, +880 1300 126 624
ইমেইল: tbtbangla@gmail.com (online), ads@thebangladeshtoday.com (adv) newsbangla@thebangladeshtoday.com (Print)
বাংলাদেশ টুডে কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত। অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি ও বিষয়বস্তু অন্য কোথাও প্রকাশ করা বে-আইনী।
Copyright © 2024 The Bangladesh Today. All Rights Reserved.
Host by
linkedin facebook pinterest youtube rss twitter instagram facebook-blank rss-blank linkedin-blank pinterest youtube twitter instagram